রহমত নিউজ ডেস্ক 11 February, 2023 05:10 PM
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি ও গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে জীবিত নেই। সরকার সিরিয়াল কিলারের মতো ধারাবাহিকভাবে গ্যাস, পানি, বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে চলছে। আগামীতে আরো দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। একে তারা বলছেন দাম সমন্বয় করা হচ্ছে। এর ফলে জনগণের ওপর যে দুর্ভোগ নেমেছে, তা আরো নামব। বর্তমান সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ, চাল, ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রতিটি পণ্যের দাম বেড়েছে। গত ১৪ বছরে কোনো জিনিসের দাম এই সরকার কমাতে পারেনি। একমাস আগে থেকে তারা বলছে, রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়তে দেওয়া হবে না। কিন্তু বাস্তবে দাম বেড়েই চলেছে।
আজ (১১ ফেব্রুয়ারি) শনিবার বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গ্যাস, বিদ্যুৎ, চাল, ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং ফ্যাসিস্ট সরকারের পদত্যাগসহ ১৪ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গণতন্ত্র মঞ্চ আয়োজিত প্রতিবাদী পদযাত্রা পূর্ব সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকির সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ূম, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সভাপতি শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান প্রমুখ। সমাবেশ শেষে প্রতিবাদী পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা। তারা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে পল্টন মোড়, দৈনিক বাংলা মোড় হয়ে মতিঝিল শাপলা চত্ত্বর পর্যন্ত যান।
মান্না বলেন, বর্তমান সরকার এতটাই নির্লজ্জ যে, দেড় মাস পর ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির দুটি বই তারা তুলে নিয়েছে। কারণ ওই বইগুলোর মধ্যে এমন কিছু জিনিস আছে, যা দেশে শিক্ষা, শান্তি, প্রগতি স্থাপনের বদলে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। এতে দেশে বিশৃঙ্খলা ও অশান্তি তৈরি হতে পারে। আমরা যখন বলেছি দেশ খোকলা হয়ে যাচ্ছে, দেশের টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে, তখন তারা (সরকার) আমাদের বকাবকি করেছে। জাতীয় সংসদে একদিন প্রধানমন্ত্রী বললেন, কারা কারা টাকা পাচার করেন, তাদের কথা আমি জানি। আপনি (প্রধানমন্ত্রী) যদি জানেনই তাহলে ব্যবস্থা নেন। উনি (প্রধানমন্ত্রী) ব্যবস্থা নেননি। দেশে জিনিসের দাম বাড়ে, টাকা পাচার হয়, ডলারের দাম বেড়ে যায়, টাকার মান কমে যায়, দেশের অর্থনীতি একেবারে ধ্বংসের দাঁড়গোড়ায়। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আগামীতে নাকি আর কোনো অনির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় আসতে পারবে না। ওনার কথা ওনার উপরেই আগামী নির্বাচনে প্রযোজ্য হবে। উনি অনির্বাচিত হয়ে আর ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ওপর আমাদের কোনো ব্যক্তিগত আক্রোশ নেই। কিন্তু চোর ওরা, ভোট ডাকাত ওরা। তারা মানুষের অধিকার হরণ করে, গুম করে, হত্যা করে। কিন্তু স্বীকার করে না। আমেরিকার স্টেট মিনিস্টার যখল এলো, তখন তারা বললো, আমাদের র্যাব কিছুটা বাড়াবাড়ি করেছে। এক হাজার মানুষ মারাকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিছুটা বাড়াবাড়ি বললেন। ওরা কী মানুষ? ওদের বিবেক-হৃদয় আছে? জনগণের জন্য কোনো ভালোবাসা, সহানুভূতি আছে? যদি থাকতো, তাহলে একের পর এক নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়তো না। আওয়ামী লীগের দুর্নীতি, লুটপাটের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র মঞ্চ লড়াই করছে, অনেকে আমাকে প্রশ্ন করেন, লড়াইটা শেষ হবে কবে? এটা আমাদের ইচ্ছার ওপর নির্ভর করছে না। তবে লড়াই শেষ হবে। সেই লড়াইয়ে এই সরকারকে বিদায় দিতে হবে। সেই জন্য আমরা আন্দোলন সংগঠিত করছি।
তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ বলছে, বিরোধী দলগুলো অশান্তি সৃষ্টি করতে পারে বলে আমরা পাহারা দিচ্ছি। র্যাব-পুলিশ কোথায়? দেশের শান্তি রক্ষায় আওয়ামী লীগের গুণ্ডা-পাণ্ডাদের পাহারাদার সাজতে হচ্ছে কেন? মনে রাখবেন, এই পাহারাদারই আপনাদের থাকতে হবে। পাহারাদার সবাইকে জেলে ঢুকতে হবে। অপেক্ষা করেন, সেই সময় আসছে। আওয়ামী লীগ উন্নয়নের কথা বলে কিন্তু তারা কোন ভালো কাজটি করেছে? চালের দাম বৃদ্ধি করে, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্য বৃদ্ধি করে, শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত না করে, মানুষের জীবন ব্যবস্থা নিশ্চিত না করে, এটাকে কোন উন্নয়ন বলা যায় না।